♦ কে চোখ রাঙাল কে বাঁকাল, পরোয়া করি না ♦ যেদিন ট্রাম্প বাইডেন ডায়ালগ হবে, সেদিন আমিও করব ♦ সরকার যেভাবে আছে নির্বাচনকালে সেভাবেই থাকবে, তফসিল ঘোষণার পর মন্ত্রীদের সুযোগসুবিধা থাকবে না, চলবে রুটিন ওয়ার্ক ♦ আবার প্রমাণ হলো বিএনপি সন্ত্রাসী দল ♦ পোশাক শ্রমিক রুটিরুজির কারখানা ধ্বংস করলে চাকরিটা কি থাকবে
ভোট এবারও থামাতে পারবে না
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আন্দোলন করে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন থামাতে পারবে না। ২০১৩-তেও পারেনি, ’১৮-তেও পারেনি, এবারও পারবে না। নির্বাচন হবে এবং সময়মতোই হবে। কে চোখ রাঙাল আর কে চোখ বাঁকাল, ওটা নিয়ে আমরা পরোয়া করি না।
সদ্যসমাপ্ত বেলজিয়াম সফর নিয়ে গতকাল বিকালে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বিকাল সাড়ে ৩টায় সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলজিয়াম সফর নিয়ে প্রথমে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এরপর ৫০ মিনিট সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে উপস্থিত সিনিয়র সাংবাদিক, সম্পাদক ও গণমাধ্যমকর্মীদের বিএনপির মহাসমাবেশ ও বিএনপি-জামায়াতের হরতাল চলাকালে ২৮-২৯ অক্টোবরের তান্ডবের ভিডিওচিত্র দেখানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরউল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী কে এম আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট যে সন্ত্রাসী এবং বিএনপি যে একটা সন্ত্রাসী দল সেটাই তারা ২৮ অক্টোবর পুনরায় প্রমাণ করল। তারা (বিএনপি) যখন সুষ্ঠুভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি করছিল তাতে কিন্তু মানুষের একটু আস্থা-বিশ্বাসও তারা ধীরে ধীরে অর্জন করতে শুরু করেছিল। সরকার তাদের কোনো বাধা দেয়নি। কিন্তু ২৮ তারিখে বিএনপি যেসব ঘটনা ঘটাল, বিশেষ করে যেভাবে পুলিশকে হত্যা করেছে, মাটিতে ফেলে যেভাবে কোপাল, সাংবাদিকদের যেভাবে পেটাল, এ ঘটনার পর জনগণের ধিক্কার ছাড়া বিএনপির আর কিছুই জুটবে না। সংকট সমাধানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শর্তহীন সংলাপের আহ্বানসংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কার সঙ্গে সংলাপ, বিরোধী দলটা কে? সংসদীয় রীতিতে সংসদের বিরোধী দল হলো প্রকৃত বিরোধী দল। এর বাইরেরগুলো দল হিসেবে গণ্য হয় না, আমেরিকায়ও হয় না। ট্রাম্পের দলকে তারা বিরোধী দল হিসেবে দেখে? যদিও আমরা তাদের সিস্টেমে না। আমরা ওয়েস্টমিনস্টার টাইপ ফলো করি। তিনি বলেন, যে মানুষগুলোকে হত্যা করা হলো, তাঁকে (পিটার হাস) প্রশ্ন (সাংবাদিকরা) করল না কেন, যখন উপনির্বাচনে ঘটনা ঘটেছিল, হিরো আলমকে কেউ মেরেছিল, তারা সে ঘটনায় বিচার দাবি করেছিল। এখন যখন পুলিশ হত্যা করল, এতগুলো সাংবাদিকের ওপর নির্যাতন করা হলো, তখন তার বিচার দাবি করেনি কেন? তিনি বলেন, যেভাবে পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করা হলো, ওই খুনিদের সঙ্গে কীসের সংলাপ? কীসের আলোচনা? যারা উন্নয়ন ধ্বংস করতে পারে তাদের সঙ্গে ডায়ালগ? সে বসে ডিনার খাক, সে বসে ডায়ালগ করুক। এটা আমাদের দেশ, স্বাধীনতা এনেছি রক্ত দিয়ে। এ কথাটা মনে থাকা উচিত। ওই খুনিদের সঙ্গে ডায়ালগ বাংলাদেশের মানুষও চাচ্ছে না। বরং বাংলাদেশের মানুষ তাদের ঘৃণা করে। বিএনপি-জামায়াতকে ঘৃণা করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য। যেটুকু অর্জন করেছিল তারা, সেটা আমরা সুযোগ করে দিয়েছিলাম, সেটা তারা হারিয়েছে।
শেখ হাসিনা আন্দোলনের নামে আগুনসন্ত্রাস বন্ধের জন্য বিএনপির প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আশা করব তারা (বিএনপি) এগুলো বন্ধ করবে। না করলে কঠিন পরিণতি তাদের ভোগ করতে হবে। এবার এমনি এমনি যেতে দেব না। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের যেভাবে শিক্ষা দিতে হয় সেই শিক্ষাটা দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। সেই শিক্ষাই আমরা দেব। এদের জন্য দেশটা ধ্বংস হোক, এটা সহ্য করা হবে না। তিনি বলেন, যারা এসব অগ্নিসন্ত্রাস করছে তাদের ধরিয়ে দিন। এর আগেও তারা যখন শুরু করেছে তখনও মানুষ ঠেকিয়েছে। এবারও মানুষই ঠেকাবে। আর যারা আগুনসন্ত্রাস চালাচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে যথাযথ শাস্তি দেওয়া হবে। আর যে হাত দিয়ে গাড়ি পোড়াবে, আমার তো মনে হয় যার গাড়ি যখন পোড়াবে আর যে ধরা পড়বে, তার হাতও ওই আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া উচিত। তাহলে তাদের শিক্ষা হবে। অগ্নিসন্ত্রাসীদের দ্রুত সাজা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
যথাসময়ে নির্বাচন, কারও চোখ রাঙানির পরোয়া করি না : সময়মতো নির্বাচন হবে বলে সাফ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একটা কথাই বলব, নির্বাচন হবে এবং যথাসময়েই হবে। কে চোখ রাঙাল আর কে চোখ বাঁকাল, ওটা নিয়ে আমরা পরোয়া করি না। কারও চোখ রাঙানিতে নির্বাচন থেমে থাকবে না। এসব সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে তারা (বিএনপি-জামায়াত) নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে পারেনি, আগামী নির্বাচনও ঠেকাতে পারবে না। যথাসময়েই নির্বাচন হবে। তিনি বলেন, ট্রাম্প সাহেবের সঙ্গে কি বাইডেন ডায়ালগ করছে? যেদিন ট্রাম সাহেব আর বাইডেন ডায়ালগ করবে, সেদিন আমিও ডায়ালগ করব। দৃঢ়কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক সংগ্রাম করে ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করেই আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। আর গণতন্ত্র থাকলে নির্বাচিত সরকার থাকলে, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকার থাকলে যে উন্নতি হয় সেটা আপনারা বিশ্বাস করেন। শুধু ঢাকায় মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে না, পরিবর্তনটা আমরা সারা দেশের তৃণমূল থেকে করেছি। তিনি আরও বলেন, পুলিশকে তো মেরেছেই, তারপর পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়েছে, সেখানেও পুলিশের ওপর আক্রমণ। আজকে ইসরায়েল প্যালেস্টাইনে যেভাবে হামলা করেছে, সেখানেও হাসপাতালে বোমা হামলা করল। নারী-শিশুদের হত্যা করেছে এবং সেখানে তাদের সবকিছু বন্ধ করে রেখেছে। আমি এখানে তফাত কিছু দেখতে পাচ্ছি না। নিজেরাই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে নিজেরাই আবার পালাল। এখন আবার অবরোধের ডাক। কীসের অবরোধ, কার জন্য অবরোধ?
সাংবাদিকদের ওপর হামলা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, সাংবাদিকদের ওপর তারা (বিএনপি) যেভাবে চড়াও হলো, বুঝতে পারলাম না কেন হঠাৎ এমন হামলা। কারণ সাংবাদিকরা তো তাদের পক্ষে ভালো ভালো নিউজ দেয়। টক শোয় বরং সবকিছুতেই সরকারের দোষটাই বেশি দেখে। তাহলে তাদের (বিএনপি) এত রাগটা কেন সাংবাদিকদের ওপর। সব জায়গায় তাদের নিউজ সবার আগে। আমার নিউজ সবার পরে। কোথাও কোথাও আমাদের নিউজ ৪ নম্বর/৫ নম্বরেও থাকে। কিন্তু তারাও যথেষ্ট সুযোগ পাচ্ছিল। তার পরও কেন তাদের রাগটা। যাদের বাস পুড়েছে তাদেরটা সরকার দেখবে বলে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩ সালে তারা একই রকম অগ্নিসন্ত্রাস করে। পরে ২০১৪ ও ১৫ সালে একই রকম অবস্থা। তিনটি বছর ধরে তাদের অগ্নিসন্ত্রাস আর আক্রমণ। শত শত মানুষকে তারা নির্মমভাবে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত বাস মালিকদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। যাতে তারা ব্যবসাটা চালাতে পারে। আহত ও নিহতদের পরিবারকে আমরা সহায়তা দিয়েছি। যেসব গাড়ি পুড়িয়েছে তাদেরটাও দেখা হবে।
অগ্নিসন্ত্রাস বন্ধ না করলে কঠিন পরিণতি : শঠের সঙ্গে শঠের মতো আচরণ করতে হবে, এমনটা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, তারা (বিএনপি) এখানে সেখানে চোরাপথে গিয়ে একেকটা গাড়ি পোড়াচ্ছে। তাদের চিহ্নিত করা ও গ্রেফতার করে যথাযথ শাস্তি দেওয়া হবে। তিনি বলেন, আশা করব তারা (বিএনপি) এগুলো বন্ধ করবে। তারা তো চাচ্ছে এটাই (নির্বাচন বানচাল)। তারা তা পারবে না। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। জনগণ ওদের সঙ্গে নেই। জনগণকে কষ্ট দিয়ে রাজনীতি হয় না। এটা তারা ভুলে যায়।
ইমেজ বাড়াতে বিএনপি ভাড়াটে লোক নিয়ে আসে : মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কথিত উপদেষ্টা পরিচয়ে মিয়া আরেফি নামে এক ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপির পল্টন কার্যালয়ে যান অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী। তাকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না- জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকেও ছাড়া হবে না। তাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। যে যতই বড় হোন না কেন আইন সবার জন্য সমান। তাকে খোঁজা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয়দানকারী জিজ্ঞাসাবাদে তো সব সত্য বলে দিয়েছেন। বিএনপি যে বিভ্রান্তি ছড়াতে তাকে ভাড়া করে এনেছিল, সে যে ভাড়াটে, তাও বলে দিয়েছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিএনপির ইমেজ বাড়ানোর জন্য ভাড়াটে লোক নিয়ে এসেছিল। সে মার্কিন নাগরিক। যারা কথায় কথায় স্যাংশন দেয় তাদেরও বিষয়টা দেখা উচিত।
রুটিরুজির কারখানা ধ্বংস করলে চাকরিটা কি থাকবে : পোশাকশ্রমিকদের আন্দোলনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আলোচনার (মজুরি বৃদ্ধি) পর্যায়ে হঠাৎ তাদের (পোশাকশ্রমিক) মাঠে নামানো এবং সেখানে আবার জ্বালাও-পোড়াও করা, কোনো কোনো কারখানায় আগুন দেওয়া হয়েছে। কারখানা দিয়ে রুটিরুজি আসে, সেই কারখানা ধ্বংস করলে তোমাদের চাকরিটা থাকবে কোথায়? সব তো গ্রামে ফিরে যেতে হবে। এটা তো বাস্তবতা।
এ প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান আরও বলেন, হঠাৎ গার্মেন্টস শ্রমিকরা রাস্তায় নেমেছে। ১৯৯৬ সালে আমি যখন সরকার গঠন করি, তখন গার্মেন্টস কর্মীরা মজুরি পেত মাত্র ৮০০ টাকা। আমরা সেটা ১ হাজার ৬০০ টাকা করি। কিন্তু যখন সরকার থেকে চলে যাই, তখন এটি কার্যকর করেনি বিএনপি। কার্যকর করেছিল ২০০৬ সালে এসে। আমরা ২০০৯ সালে সরকারে আসার পর ১ হাজার ৬০০ টাকা থেকে প্রথম ধাপে ৩ হাজার ৫০০ টাকা মজুরি বৃদ্ধি করি, দ্বিতীয় ধাপে ৫ হাজার ৩০০, তৃতীয় ধাপে ৮ হাজার ৩০০ টাকা করেছি। এই অল্প সময়, মাত্র ১৪ বছরের মধ্যে তিন দফা তাদের মজুরি বাড়িয়ে ৮ হাজার ৩০০ টাকা করেছি। তিনি বলেন, শুধু তা-ই নয়, তাদের সন্তানদের জন্য ডে কেয়ার সেন্টারের ব্যবস্থা করেছি। প্রতিটা গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রিন ইন্ডাস্ট্রি করে দিই। শ্রমিকদের টিফিনের ভাতা, মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ সব রকমের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। করোনাকালীন যখন মালিকরা বেতন দিতে পারছে না, সেই বেতন আমি সরকারের পক্ষ থেকে মালিকদের হাতে না দিয়ে প্রতিটি গার্মেন্টস শ্রমিকের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সমস্ত টাকা তাদের হাতে পৌঁছে দিই। সরাসরি, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তাদের হাতে পৌঁছে দিয়েছিলাম। মালিকদের বিশেষ প্রণোদনা দিই, যাতে ব্যবসাবাণিজ্য চালাতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, জিনিসের দাম, মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, এটা তো সবাই জানে। বিশ্বব্যাপী, শুধু বাংলাদেশে না। বাংলাদেশে তো আমরা যে পয়সায় কিনে খেতে পারি, বিদেশে কিন্তু সে অবস্থা না, আরও খারাপ অবস্থা। তার পরও আমাদের প্রচেষ্টায় ১ কোটি মানুষকে খাদ্যসহায়তা দিয়েছি। বিশেষ পারিবারিক কার্ড করে দিয়েছি, যাতে স্বল্পমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারে। তিনি বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিকরা যদি রেশন নিতে চায়, মালিকদের সেই ব্যবস্থা করে দেওয়া আছে। তারা কিন্তু অল্প পয়সায় এদের খাদ্যসামগ্রীও দিয়ে থাকে। এ সুবিধাটাও আমরা করে দিয়েছি। এরপর তারা যখন দাবি করেছে, আমাদের শ্রম মন্ত্রণালয় একটা কমিটি করে দিয়েছে, আলোচনা চলছে। সে আলোচনায় একটা কথা ছিল, এই ডিসেম্বর থেকেই তারা এই মজুরি বাড়ানোর ব্যবস্থা করে দেবে, এ বিষযে কত বাড়বে না বাড়বে, সেটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এ আলোচনার পর্যায়ে হঠাৎ তাদের মাঠে নামানো এবং সেখানে আবার জ্বালাও-পোড়াও করা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি সত্যি এজন্য দুঃখ পাচ্ছি।
প্রসঙ্গ নির্বাচনকালীন সরকার : নির্বাচনকালীন সরকারের কলেবর যা আছে তাই থাকার ইঙ্গিত দিয়ে এ-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আরপিও অনুযায়ী যখনই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হবে এবং নমিনেশন সাবমিট করা হবে তখন থেকেই মন্ত্রীরা আর কোনো সরকারি সুযোগসুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন না। তখন প্রার্থী হিসেবে তাদের ভোট চাইতে হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনি প্রচারের সময় কোনো মন্ত্রী তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবেন না। কোনোরকম সরকারি সুযোগসুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন না। এটাই নিয়ম। কিন্তু সরকার তো থেমে থাকবে না। সরকারি দৈনন্দিন যে কাজগুলো সেগুলো কিন্তু করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আকার ছোট করলে অনেক মন্ত্রণালয়ের কাজ আর হয় না। সেগুলো বাধাগ্রস্ত হয়। সেগুলো যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, উন্নয়নের ধারা যাতে অব্যাহত থাকে আমাদের সেটাই প্রচেষ্টা। তিনি বলেন, একটি অফিস প্রস্তুত করার চেষ্টা করছি, যেখানে ভোটের সময় বসব।
ইসরায়েলের সঙ্গে বিএনপির তফাত নেই : অন্য এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, গাজায় যেমন ইসরায়েল হাসপাতালে হামলা করল, বিএনপি একই কায়দায় পুলিশ হাসপাতালে হামলা করেছে। মনে হয় ইসরায়েল আর ওদের মধ্যে ভালো একটা সমঝোতা আছে। ঠিক একইভাবে ওখানেও শিশু-নারী হত্যা। এরাও এখানে পুলিশ হত্যা করছে। আমি কোনো তফাত দেখি না। তিনি বলেন, বিএনপি বা জামায়াত এরা কিন্তু এখন পর্যন্ত টুঁশব্দ করছে না। অথচ আমরা সব সময় কিন্তু ফিলিস্তিনের সঙ্গে আছি। আমি আন্তর্জাতিকভাবে যেখানে যাই তাদের কথা বলি। তিনি বলেন, যারা (বিএনপি) এত কথা বলে, আবার ইসলামী ভাব ধরে তারাও টুঁশব্দ করছে না। কাদের স্বার্থে? সেটা আমারও প্রশ্ন। সংসদে আমরা ফিলিস্তিন ইস্যুতে নিন্দা প্রস্তাব নিয়েছি।