ব্লাক ফ্রাইডে! কালো শুক্রবার! শুনলেই কেমন গা ছম ছম করে। মনে হয় অলুক্ষণে একটা দিন। অশুভ কোন কিছু ঘটতে চলেছে এই দিনে।অথচ ব্যাপারটা একেবারে উল্টা।
এই দিনের জন্য সারা বিশ্ববাসী সারা বছর ধরে অপেক্ষা করে থাকে। বিশেষ করে আমেরিকার জনগণের কাছে বহু আকাঙ্খিত একটি দিন। অনেক আমেরিকান সারা বছর ধরে শুধুমাত্র এই দিনটির আশায় বসে থাকেন। এই দিনে আমেরিকার প্রায় সব ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য অস্বাভাবিক মূল্য ছাড়ে বিক্রি করে দেয়। ফলে আমেরিকায় সারা বছরে যে পরিমাণ বেচা-কেনা হয়, তার প্রায় অর্ধেক পরিমাণ হয় শুধুমাত্র এই একটি দিনেই।
কিন্তু কেনা বেচা, ব্যবসা এগুলো তো ভাল জিনিস। তাহলে দিনটির নাম ব্লাক ফ্রাইডে হলো কিভাবে? এই নিয়ে কয়েকটি কাহিনী প্রচলিত আছে।
১। আমেরিকায় নভেম্বর মাসের চতুর্থ বৃহস্পতিবার পালিত হয় ‘থ্যাঙ্কস গিভিং ডে’। এদিন আমেরিকার জনগণ একে অপরকে ধন্যবাদ জানায়। ঠিক এর পরদিন শুক্রবার পালিত হয় ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’।ব্ল্যাক ফ্রাইডে’র দিন পুরো আমেরিকায় এতো বিপুল পরিমাণ বেচা-কেনা হয় যে, এই একদিনে আমেরিকার অর্থনীতির সূচক এক লাফে অনেকখানি সামনে এগিয়ে যায়। সারা বছর লাল কালিতে লোকসান বা বাকি লিখতে লিখতে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া ব্যবসায়ীরা এদিন দোকানের খাতায় লাভের অঙ্ক লিখে কূল পান না। আর লাভ তো লিখতে হয় কালো কালিতেই! তাই এদিনের নাম ব্ল্যাক ফ্রাইডে হতে পারে।
২। আরেকটি তথ্য চালু আছে। ১৭৮৯ সাল থেকে আমেরিকাতে নভেম্বরের চতুর্থ বৃহস্পতিবার পালিত হয় ‘থ্যাঙ্কস গিভিং ডে’। এ দিন সরকারীভাবে ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়। মুলত ঘরে নতুন ফসল তোলার উৎসব হিসেবেই এই দিনটি পালন করা হয়। নতুন ফসলের জন্য আনন্দকেই স্মরণ করে ঈশ্বরের প্রতি ধন্যবাদ বা ‘থ্যাঙ্কস গিভিং ডে’ পালন করা হতো। ‘থ্যাঙ্কস গিভিং ডে’ এর পরদিন যে শুক্রবার, সেদিনই আসলে ব্ল্যাক ফ্রাইডে। এদিন থেকেই বছরের ক্রিসমাস শপিং মৌসুম শুরু হয়ে যায়।
ব্লাক ফ্রাইডে নামটা আসে আরো পরে। ১৯৮০ সালের দিকে বা আগে পিছে। শুক্রবার ছুটি নিয়ে নিলে টানা চারদিনের সাপ্তাহিক ছুটি পাওয়া যায়, তাই শ্রমিকেরা এদিন ‘অসুস্থ’ দেখিয়ে ছুটি নিত। তাছাড়া সেদিন কেনাকাটার জন্য রাস্তাঘাটে এত জ্যাম লেগে যেত যে, সেটাকে রীতিমতো দুর্যোগ হিসেবে দেখা হতো। তখন থেকেই এই শুক্রবারকে ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ ডাকা শুরু হয়। ফিলাডেলফিয়াতে প্রথম এ কথাটি চালু হয়। এমনকি তার পরেরদিনকে ব্ল্যাক স্যাটারডে-ও বলা হতো।
নাম যে কারনেই হোক। এই দিনে এখন বিশ্বব্যাপী বিশাল সেল লেগে থাকে। তখনকার দিনে এরকম এত এত ই-কমার্স সাইটের বালাই ছিল না। কিন্তু এখন ইকমার্স সাইটগুলো প্রতিযোগীতা শুরু করে দেয় কে কত আকর্ষনীয় সেল অফার দেবে। কাস্টোমার তা লুফে নেয় সহজেই।ডোমেইন, হোস্টিং, থিমস, প্লাগইনস, বিভিন্ন টুলস, কোর্স/টিউটোরিয়ালস থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রডাক্ট পাওয়া যায় এই দিনে অর্ধেকেরও কম দামে। এবং সবাই এই দিনের অপেক্ষায় থাকে বিভিন্ন প্রডাক্ট কেনার জন্য।