ছাত্রলীগ কর্মীকে ট্রেন থেকে নামিয়ে মেরে মাথা ফাটানোর অভিযোগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে ট্রেন থেকে নামিয়ে মেরে মাথা ফাটানোর অভিযোগ উঠেছে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে বলে বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মেহেদী মাসুদ জানান।

ছাত্রলীগ

তিনি বলেন, আহত ওই ছাত্রলীগ কর্মীকে বোয়ালিয়া থানায় সোপর্দ করে হামলাকারীরা।

পরে জামায়াতের করা আগের এক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

ছাত্রলীগ কর্মী আজিজুল হক আকাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

তবে হামলার ঘটনায় জামায়াত-শিবিরের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করছেন ওই দুই সংগঠনের শীর্ষ নেতারা।

প্রত্যক্ষদর্শী আকাশের সহপাঠীরা জানান, তাদের বর্ষের ২৫ জন শিক্ষার্থী মিলে পঞ্চগড় ভ্রমণের উদ্দেশে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন যান।

সেখানে ‘বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস’ নামের ট্রেনটি ৯টায় যাত্রা শুরুর কথা থাকলেও বিলম্ব করে৷

তখন ৪০-৪৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি এসে ট্রেনের জানালা দিয়ে তাদের কাছে বিভাগের নাম জানতে চান।

পরে শিক্ষার্থীরা বিভাগের নাম জানালে অজ্ঞাতরা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ‘সানি’ নামে কোনো শিক্ষার্থী ট্রেনে তাদের সঙ্গে আছে কিনা জানতে চান।

শিক্ষার্থীরা জানায়, এই নামে ট্রেনে তাদের সঙ্গে কেউ নেই।

একপর্যায়ে তারা সানি ভেবে আকাশকে সন্দেহ করেন। ধাওয়া করলে ট্রেন থেকে নেমে দৌড় দেন আকাশ।

হামলাকারীরা ধাওয়া করে ‘হকিস্টিক’ দিয়ে আঘাত করলে আকাশের মাথা ফেটে যায়। তারপরও হামলাকারীরা আকাশকে ধরে মারধর শুরু করেন।

শিক্ষার্থীরা গিয়ে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তারাও মারধরের শিকার হন।

একপর্যায়ে আকাশকে তারা অন্য কোথাও নিয়ে যেতে চান।

পরে শিক্ষার্থীদের জোর-জবরদস্তির মুখে তারা আকাশকে নিয়ে বোয়ালিয়া থানায় যান।

সহপাঠীদের ভাষ্য, থানার সামনে এসে হামলাকারীরা নিজেদের শিবির বলে পরিচয় দেন এবং আকাশকে থানায় রেখে চলে যান।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন বকুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গতকাল রাতে ঘটনাটি জানার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও বিভাগের কয়েকজন শিক্ষকসহ আমরা থানায় যাই। প্রথমে আহত আকাশের প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করি।

“তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়েছে বা তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে কিনা তা থানার ওসি জানাতে পারেননি।”

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি আব্দুল মোহাইমেন বলেন, “একজন শিক্ষার্থীকে মারধর করার বিষয়টি নজরে এলেও তাকে কে বা কারা, কেন মারধর করেছে তা জানি না। ওই ঘটনার সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির জড়িত নয়।”

মহানগর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, কে বা কারা জামায়াতের নাম ব্যবহার করে এটি করেছেন তা তিনি জানেন না।

তবে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মেহেদী মাসুদ বলেন, “গতকাল রাতে জামায়াতের কিছু লোক এক ছাত্রলীগ কর্মীকে থানায় সোপর্দ করেছেন ৷ পরে তাদের করা আগের এক মামলায় ওই ছেলেকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ আদালতে পাঠানো হয়েছে৷”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *